।।পার্থ প্রতিম আচার্য ।।
ইরম শর্মিলা চানু । বহুদিন খবরের কাগজের শিরোনামে ছিলেন । কালা কানুন
Armed Forces Protection Act এর বিরুদ্ধে তার ষোল বছরের অনশন লড়াই এর জন্য । তার নাম দেয়া হয়েছিলো
"লৌহমানবী" । পৃথিবীর দীর্ঘতম অনশনকারী হিসেবে তাকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে । তার নামে এই সময়কালে সমর্থন যোগাতে হাজির হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস
, সি পি আই এম এল ইত্যাদি রাজনৈতিক দল ছাড়াও অসংখ্য
NGO. সমাজ সংস্কারক , যার অন্যতম আন্না হাজারে প্রেরিত প্রতিনিধি দল ।
মনিপুর
থেকে AFPSA ওঠেনি । শর্মিলা ২০১৬ সালের জুলাই মাসে তার অনশন প্রতিবাদ ভেঙে রাজনৈতিক দল
গঠন
করেন
।
অবশ্য
ঘোষণা
রাখলেন , "কালা কানুন ওঠানোর জন্য লড়াই জারী থাকবে"। তিনি বহু মানবাধিকার সংগঠন থেকে সম্মান যেমন পেলেন
, অর্থও
পেলেন
।
২০১৬ , অক্টোবর ৯
, তার
পার্টি People's Resurgence
and Justice Alliance নামে
বিধানসভা
নির্বাচনে
নামে
।
তিনি
নিজে
লড়লেন।
ফলাফল --- শর্মিলার প্রাপ্ত ভোট ৯০।
আর
বিজয়ী
প্রার্থীর
প্রাপ্ত
ভোট
১৮ , ৬৪৯।
পত্র
পত্রিকায়
লেখালেখি
শুরু
হলো
।
ফেসবুকে
হাজারখানেক
পোস্ট
হলো
।
জনগণের
কৃতঘ্নতা
নিয়ে
গালিও
এলো
।
শর্মিলা
রাজনীতিকে
আপাতঃ
বিদায়
জানিয়ে
বানপ্রস্থে
চললেন
।
প্রশ্ন
হলো --- তার এই
অবস্থার
জন্য
দায়ী
কে ?
বাস্তব
যা
বলে
------------------
**ইরম শর্মিলা যে
গান্ধীবাদী
পথে
তার
প্রতিবাদ
জারী
রেখেছিলেন , তা কখনোই জনগণের আন্দোলন তৈরি করতে পারে নি
।
যারা
তার
পেছনে
সমর্থন
জুগিয়েছিল
তারা
বেশিরভাগই
বড়
বড় NGO বা সংস্কারক । ** ষোলো বছরের আন্দোলনে কিছুই আদায় হয়
নি
।
বরং
জনতার
এতে
কিছু
হবে
না --- এই বিশ্বাস জনমনে তৈরি হয়েছিল । ** ভারতীয় রাজনীতির পাশা খেলুড়েদের শর্মিলা চিনতেই পারেন নি
। ** নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পর্কে শর্মিলার প্রত্যাশার পারদ যারা চড়িয়েছিলেন
( অনেকেই
চেনেন
তাদের) এবং শেষে যেই
NGO নির্ভর
দলটি
তার
পরামর্শদাতার
ভূমিকায়
অবতীর্ণ
হয়েছিলো তারা চেয়েছিলো শর্মিলার কাগুজে জনপ্রিয়তাকে ব্যবহার করে মণিপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনে নিজেদের প্রবেশ ঘটাতে ।
দার্শনিক
এরিস্টটল
ট্র্যাজিক
চরিত্র
বর্ণনা
করতে
গিয়ে "Tragic
Hubris" শব্দগুচ্ছ
ব্যবহার
করেছিলেন , যার মানে হলো ট্র্যাজেডির নায়কের চরিত্রের এমন একটা দোষ যার জন্য তাকে উঁচু স্থান থেকে মাথা নিচু করে নাটকের পরিসমাপ্তিতে মরতে বা
নিচুতে
পড়তে
হয়।
যেমন ---- ম্যাকবেথের ক্ষেত্রে উচ্চাকাঙ্ক্ষা , হ্যামলেটের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তহীনতা । শর্মিলার ক্ষেত্রে
"Tragic Hurbis" হলো ভারতের
"রাজনৈতিক
ব্যবস্থা
ও তার থেকে উত্তরণের রাস্তা সম্পর্কে অজ্ঞতা"। ভারতীয় রাজনীতিতে বাহুবলী , ধর্ষণকারী , খুনী --- এমন অনেক অসামাজিক ভোটপ্রার্থীরা জিতে যায় লক্ষ ভোটে। ইরম হেটে যায়। কারণ ভারতের জনগনের একটা বড় অংশ তাদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় বোধহয় ভাবতে শিখেছে যে আদর্শের সঙ্গেভোটের যোগসূত্রটা নেই। যা আছে তা হলো দেনা-পাওনা। তাৎক্ষণিক লাভালাভ। তাই যে যোগী দাঙ্গার অভিযোগে অভিযুক্ত ( IPC Section 147 ) ; খুনের চেষ্টায় অভিযুক্ত (IPC Section 307 ) অন্যের জীবন ও সম্পত্তিকে বিপদাপন্ন করার দায়ে অভিযুক্ত (IPC Section 336ং, সেই যোগী ভিখ পায় , মুখ্যমন্ত্রীও হয় ----- শর্মিলার মতো গেঁয়ো যোগীর ভিখ নেই । এই হলো ভারতীয় গণতন্ত্রের বর্তমান হাল।।
বানপ্রস্থে না গিয়ে মণিপুরের গান্ধীবাদী লৌহ মানবীর উচিত - আত্ম বিশ্লেষণ করে চিত্রাঙ্গদার মতো বীরাঙ্গনা হয়ে ফিরে আসা ।
বানপ্রস্থে না গিয়ে মণিপুরের গান্ধীবাদী লৌহ মানবীর উচিত - আত্ম বিশ্লেষণ করে চিত্রাঙ্গদার মতো বীরাঙ্গনা হয়ে ফিরে আসা ।
This comment has been removed by the author.
ReplyDelete